Sunday, December 2, 2018

পাঠিকা, তোমার জন্য

আমার কালিতে একটি কালিমা প্রায় লেগেই থাকে। আমি নাকি পাঠিকাদের 'ঠুকে' লিখি। এ এক সমস্যা। পাথরে পাথরে ঘর্ষণ ছাড়া আগুন জ্বলবে কেন? পাঠিকা, তোমায় আমি বুঝিনা, এমন নয়। আসলে, তুমি বেশিই ভালো। আমি অতটা ভালো হতে পারি না। তুমি নিজেকে ভালোবাসো, নিজেরটা নিজের মতো করে চেয়েও নিতে পারো। কেউ যদি দিতে অক্ষম হয়, তবে যথাযথ দরজা বন্ধও করে দিতে পারো।
তুমি মায়ের ব্যথা বোঝো, বাবার চাঞ্চল্য বোঝো। আবার ভাই, বোনদের আবদারও মেনে চলার চেষ্টা কর। বারবার নিজের জন্য একটা বন্ধু খুঁজে চলো। নিজে তো সহজেই মানুষের বন্ধু হও, তাই বুঝতে পারো না কোথায় অন্যের ক্ষেত্রে হিসেবটা মেলে না। মাঝে মাঝেই কিছু ছেলে আসে জীবনে, প্রতিশ্রুতি দেয় বন্ধুত্বের, কিন্তু শেষমেশ তোমায় 'ভালোবেসে' ফেলে। এখন তো এমন হয়েছে যে মাঝে মাঝে এই ভালোবাসা শব্দটা শুনলেই তুমি বিরক্তি বোধ করো। কি বোঝে এই ছেলে গুলো ভালোবাসার? শুধুই তো মেয়ে দের নিজের সামগ্রী ভাবতে শিখেছে এরা। 
কঠিন সমস্যা। কিন্তু কি করতে পারো তুমি? কতবার আর ছেলেদের ওপর রাগ, অভিমান করবে? হয়তো কখনো নিজেরও দোষ খুঁজে বেড়িয়েছো, যদিও আদৌ কোনো দোষ তোমার ছিল না।
আসলে ছেলেদের কি সমস্যা জানো? তারা বেশির ভাগই মা বলতে অজ্ঞান, বাকিরা ভাই ফোঁটা পেয়ে spoiled। আর কেউ কেউ দুর্ভাগ্যবশত হিন্দি সিনেমার দ্বারা আহত।
তবে তোমায় বুঝলো কজন? কেউ বুঝলো না যে তুমি শুধু স্বাধীনতাই চেয়েছিলে। কিন্তু কি করে তারা স্বাধীনতার গুরুত্ব বুঝবে, যখন নিজেরাই পরাধীন থাকতে চেয়েছে তোমার কাছে? কেউ বোঝেনি যে তোমার মন যখন বন্যায় ঘরহারা শিশুর জন্য কাঁদে, সেটা তোমার ন্যাকামো নয়, সেটা তোমার দামামা বাজানোও নয়। সেটা শুধুই সাধারণ তুমি। তারা বোঝেনি কারণ তারা ভাবেনি তোমার তুমি কে নিয়ে। তারা শুধু ভেবেছে তুমি তাদের কি ভাবে আনন্দ দিয়ে এসেছো। তারা ওইটুকুই দেখতে পায়, বুঝতে পায়। তাদের যে দূরদৃষ্টি নেই তা আর নতুন কি, তবে ক্ষুরদৃষ্টিও না থাকায় তোমার যত অশান্তি।
আসলে এটা ভেবে একটা ছেলের কি হবে, যে তার মধ্যে পছন্দ হওয়ার মতো সব কিছু নেই? তাই দ্রৌপদীকে একই সাথে দেবীও বানানো হয় ও তার গায়ে কাদাও ছেটানো হয়। ছেটানো হয়, কারণ ছেটানো যায়।
আজ তুমি প্রতিবাদ করছো, তাই আমরা ছেলেরা না মাটি পাচ্ছি না ডানা। আরও আগে করতে হতো তোমায়, বারবার করে যেতে হবে যতদিন না আমরা বুঝি যে আমাদের কোনো আজন্ম অধিকার নেই। আমরা বোতল বোতল মদ গিলে বালতি বালতি চোখের জল ফেলতে পারি নিজেদের ওপর দয়া করে কিন্তু নিজেদের মায়েদের কথা যদি ভাবার অভিজ্ঞতা থাকতো, তবে এতদিনে চোখের সব জল হয়তো শুকিয়ে যেত।
হয়তো তাহলে আজ না তোমায় চোখের জল ফেলতে হতো, না আমাদের। আসলে এই নারী পুরুষ বিতর্কে কোনো বিজেতা নেই, শুধু মানুষের হেরে যাওয়াই আছে। আর আছে নতুন কিছু ব্যবসা।
সত্যি কথা বলতে, ছেলেদের ওপর আমার মায়া আসে। নিজে তো ছেলে হয়েই জন্মেছি, কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই যেন সব সহজ সত্য গুলো এসে কৃত্তিম মিথ্যে সত্বাগুলোকে মুছে চলে যাচ্ছে।
কত প্রানীরই তো ছেলে থাকে না। আমাদের কেন আছে? Existential হয়ে লাভ নেই। আছে তো আছে। শুধু মাঝপথে একটু একটু করে মনুষ্যত্ব হেরে গেছে।

No comments:

Post a Comment

Exodus

What is life but a series of exodi - A child's birth from a safe, nurturing womb A boy learning to walk by himself A young man yearning ...