যে কর্ম চরিতার্থ করিতে বসিয়াছি, তাহা যথেষ্ট মাত্রায় কঠিন। ঐতিহাসিক কাহিনী লেখা সহজ নহে, প্রধানত লেখার শখ যখন শরদিন্দুর লেখা হইতে জন্মিয়াছে। শুরুতেই যে প্রশ্নের উদয় হয়, তাহা হইল, ইতিহাস ঠিক কাহাকে কহা হয়? যে স্থান, কাল, ঘটনা আমি প্রত্যক্ষ করি নাই, তাহাকে ইতিহাস কহিব? নাকি যে সকল গতি প্রকৃতি আমায় নিজেদের সাথে জুড়িয়া লইয়াছে, শুধু তাহাদের ইতিহাসের সিংহাসনে বসিবার অধিকার দিবো? সহজ ভাবে এই ভাব-কে ব্যাক্ত করিলে ইহার মানে এই রূপ দাঁড়াইবে : নিজেকে নিয়েই লিখিবো না নিজেকে বাহিরে রাখিয়া? পাঠকের বুদ্ধি থাকুক বা নাই থাকুক, সে বিচার করার দায়িত্ব বোধয় আমার ওপর পড়ে না। অতএব, নিজেকে অধিক বুদ্ধিমান ভাবিয়া ফেলিয়া নিজের জীবনের ঘটনা (বা যা চাহিয়াছি ঘটুক, কিন্তু ঘটে নাই ) ইতিহাসের মোড়কে পাঠককে পড়ানো ঠিক হইবে কিনা তাহা নিয়া বড়ই দ্বন্দে পড়িয়াছি। আমি যা লিখি তাহা অনেকেরই বোধগম্য হইয়া উঠিতে পারে না। ইহা বড় দুঃখের বিষয় আমার নিকট। দুঃখ ইহা নিয়া হয় না যে পাঠক নিজের মতো করিয়া মানে খুঁজিয়া আমার সাহিত্যকে সম্মান দেন; বরং দুঃখ এইখানে যে আমার লেখায় আমায় খোঁজা হয়।
হয়তো সেখানেও দুঃখ বিরাজ করিত না, যদি কিছু কিছু লেখায় আমাকে কেউ একজন খুঁজিয়া বাহির করিয়া লৈত। কিন্তু সেসব লেখা সেই সব চোখে হয়তো পড়ে নাই, বা পড়িলেও তাহা অন্তরে গিয়া সেই পাঠক-পাঠিকাদের সব লন্ড-ভন্ড করিয়া দিতে সক্ষম হয় নাই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই, যে লেখায় লেখক কে অনুসন্ধান করা হইয়াছে, সেখানে লেখক নাই। কিন্তু কোথায় আমি আছি, আর কোথায় নাই, এই খেলাই তো একমাত্র লীলা-খেলা যার স্বাদ তুমি পাইয়াছো, আমিও পাইয়াছি। তাই জীবনের যেকোনো গভীর প্রশ্নের মতো ইহা হইতে মুক্তির নির্দিষ্ট সমাধান অন্তত আমার জ্ঞানসীমার বাহিরে।
যাহাকে নিয়া লিখিতে চলিয়াছি, সে এই গল্পে একটি ছোট্ট বালক। বয়স তখনও দশ অতিক্রম করে নাই। ফুটফুটে চেহারা, নিষ্পাপ দুই চোখ, মাথায় তৈলপূর্ণ ঘন কালো চুল। ইহাকে আজ দেখিলে হয়তো অনেকেই রাজপুত্র ভাবিয়া বসিত ক্ষণকালের জন্য (বর্তমান ভারতবর্ষ প্রজাতন্ত্রে অগাধ বিশ্বাস রাখিলেও প্রজারা মনে মনে রাজপুত্রের চেহারা ঠিকই কল্পনা করিতে পারিবেন)। তবে আমাদের গল্পের বালক মটেও রাজপুত্র নহে। সে সাধারণ বালক, অতি সাধারণ। তাহার জীবনের কর্মও যথেষ্ট সাধারণ গোছেরই হইয়াছে ভবিষ্যতেও। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ আমাদের বর্তমান ইতিহাসের অঙ্গ নহে। তাই আমরা সঠিক কালে ফিরিয়া যাই এই মুহূর্তে।
বালকের নাম নীলকণ্ঠ। কি ভাবিয়া তাহার পিতা মাতা এই নামকরণ করিয়াছিলেন বলা মুশকিল, কেন কোনো অভিভাবক আদৌ চাহিবেন যে তাহার পুত্র বিষ পান করিবে, ইহা আমার পক্ষে যুক্তি দিয়া বোঝা সম্ভব নহে। তাহার ওপর আবার নাকি বালক সেই বিষ পান করিয়া জীবিত থাকিবে এবং জগৎকে উদ্ধার করিবে! পিতা মাতা-রা নাম রাখিবার সময় একটু ভাবিতে পারেন, যে ওনারা বালকটি চোখ মেলার পূর্বেই তাহার ওপর জগৎ সংসারের বোঝা চাপিয়ে দিতেছেন। তাই বিদেশী মতে টম , হ্যারি নাম গুলোই আমার বেশি প্রিয়। আমি হয়তো বিবাহ করিব না, হয়তো নিজের সন্তান এই বসুন্ধরার কোলে অনিবও না; তবু , যদি আদৌ পিতৃত্ব অনুভব করি, তবে নামকরণে কোনো আড়ম্বর রাখিব না। আবার ভুল দিকে পাঠককে লইয়া আসিয়াছি! বালকের গল্প নিয়ে পাঠক উৎসাহী, আমার জীবন কাহিনীতে নয়, তাও আবার যদি সেই কাহিনীতে কোনো দৃঢ়তা থাকিয়া থাকে। না, পাঠক পরম শ্রদ্ধেয়, তাঁহার রুচি বিচার করা মোটেও ভদ্রতা নহে।
নীলকণ্ঠ রিকশায় কাঁদিতে কাঁদিতে বাড়ি ফিরিতেছে। তাহার কান্না কিছুতেই থামিতেছে না। হাউ হাউ করিয়া কাঁদিতেছে। বাচ্চারা কাঁদে, অন্তত যখনকার ইতিহাস লিখিতেছি, তখন কাঁদিত। ইহার মধ্যে তাৎপর্য পূর্ণ কিছু হয়তো পাঠকের নিকট নাই । কিন্তু লেখক যদি জাতিস্মর হইয়া থাকেন, তবে তিনি তো বালকের ভিতরে চলা তোলপাড় দেখিতে পাইবেন। যদিও এই লেখক জাতিস্মর কিনা, বর্তমান জীবনে তাহার টের আমি পাইনাই। আঃ! আবার নিজেকে লইয়া পড়িলাম! নীলকণ্ঠের গল্পে ফিরিয়া যাই এখনই, না হইলে পাঠক আর সহ্য করিবেন না।
নীলকণ্ঠ কাঁদিতেছে, হাউ হাউ করিয়া কাঁদিতেছে। রিকশা ছুটিতেছে। এমন সময় পশ্চাতে এক সাইকেল আসিয়া উপস্থিত হইলো।
"একি নীলকণ্ঠ তুমি কাঁদিতেছো কেন? পরীক্ষা ভালো হয় নাই?"
বিস্ফোরিত লাল চক্ষু লইয়া টুকটুকে রাজপুত্র দেখিলো তাহার অঙ্কের মাস্টারমশাই তাহাকে প্রশ্ন করিতেছে!
এ কি অদ্ভুত ব্যাপার! অঙ্ক পরীক্ষা দিয়া সে ফিরিতেছে , আর তাহার বাড়ির অঙ্ক শিক্ষক ঠিক এই সময়ই তাহার রিকশার পশ্চাতে আবির্ভূত হইলেন কি করিয়া? নীলকণ্ঠ সহজেই বিস্মিত হইয়া পড়ে চিরকাল। কিন্তু এই মুহূর্তে তাহার দুঃখ তাহার বিস্ময়কে গ্রাস করিয়া লইলো, সহজেই।
সে আকুতির সহিত কহিলো, "আমি একটি অঙ্ক ভুল করিয়া ছাড়িয়া চলিয়া আসিয়াছি। কি মনে হইয়াছিল , ঐটা পড়ে করিব ভাবিয়া অন্য গুলি ঠিক করিয়াছি কিনা, তাহা ভালো করিয়া দেখিলাম। তাহার পর আর ওই অঙ্কটির কথা খেয়াল রহে নাই। " বলিয়া সে আবার হাউ হাউ শব্দে কাঁদিয়া উঠিল।
মাস্টার পড়িলেন বেপাকে। উনি বুঝিতে পারিলেন না কি বলে সান্তনা দিবেন। জিজ্ঞেস করিলেন, "বাকি গুলি সঠিক করিয়া আসিয়াছো তো?"
"হ্যা। কিন্তু যেটা ছাড়িয়া আসিয়াছি, ঐটিও আমি পারিতাম। পাঁচটি নম্বর চলিয়া গেল। " নীলকণ্ঠ আবার চক্ষু হইতে অশ্রুর ধারা নিক্ষেপ করিল।
মাস্টার বলিলেন, "ঠিক আছে, উহাতেই হইবে। তুমি জানো তুমি পারিতে। ইহাই তো যথেষ্ট। পরীক্ষা শেষ হইয়াছে , বাড়ি গিয়া খেলা করো। "
এই ঘটনার পর পৃথিবীতে অনেক কিছু ঘটিয়া গিয়াছে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আরও দুই বার বিবাহ করিয়াছেন, ভারত অলিম্পিক্সে গুলি ছোড়ায় সোনা পাইয়াছে , সুনামি আসিয়া বর্তমানকে প্রলয়ের আভাস দিয়া গিয়াছে, প্লুটো তাহার বাড়ি হইতে বিতাড়িত হইয়াছে, অনেক রমণীর হৃদয় ভাঙিয়াছে, অনেক রমণী হৃদয় ভাঙিয়াছেন, নারীবাদ, জাতীয়তাবাদ, মাওবাদ সব কিছুই মনুষ্যত্বকে বাদ দিয়া নিজেদের দামামা বাজাইয়াছে, হিংসা নিজের থাবা তোমার, আমার সকলের মনে আরও কঠিন ভাবে বসাইয়াছে। আর নীলকণ্ঠ?
সে বিষ পান করিয়া চলিয়াছে।
হয়তো সেখানেও দুঃখ বিরাজ করিত না, যদি কিছু কিছু লেখায় আমাকে কেউ একজন খুঁজিয়া বাহির করিয়া লৈত। কিন্তু সেসব লেখা সেই সব চোখে হয়তো পড়ে নাই, বা পড়িলেও তাহা অন্তরে গিয়া সেই পাঠক-পাঠিকাদের সব লন্ড-ভন্ড করিয়া দিতে সক্ষম হয় নাই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই, যে লেখায় লেখক কে অনুসন্ধান করা হইয়াছে, সেখানে লেখক নাই। কিন্তু কোথায় আমি আছি, আর কোথায় নাই, এই খেলাই তো একমাত্র লীলা-খেলা যার স্বাদ তুমি পাইয়াছো, আমিও পাইয়াছি। তাই জীবনের যেকোনো গভীর প্রশ্নের মতো ইহা হইতে মুক্তির নির্দিষ্ট সমাধান অন্তত আমার জ্ঞানসীমার বাহিরে।
যাহাকে নিয়া লিখিতে চলিয়াছি, সে এই গল্পে একটি ছোট্ট বালক। বয়স তখনও দশ অতিক্রম করে নাই। ফুটফুটে চেহারা, নিষ্পাপ দুই চোখ, মাথায় তৈলপূর্ণ ঘন কালো চুল। ইহাকে আজ দেখিলে হয়তো অনেকেই রাজপুত্র ভাবিয়া বসিত ক্ষণকালের জন্য (বর্তমান ভারতবর্ষ প্রজাতন্ত্রে অগাধ বিশ্বাস রাখিলেও প্রজারা মনে মনে রাজপুত্রের চেহারা ঠিকই কল্পনা করিতে পারিবেন)। তবে আমাদের গল্পের বালক মটেও রাজপুত্র নহে। সে সাধারণ বালক, অতি সাধারণ। তাহার জীবনের কর্মও যথেষ্ট সাধারণ গোছেরই হইয়াছে ভবিষ্যতেও। কিন্তু সেই ভবিষ্যৎ আমাদের বর্তমান ইতিহাসের অঙ্গ নহে। তাই আমরা সঠিক কালে ফিরিয়া যাই এই মুহূর্তে।
বালকের নাম নীলকণ্ঠ। কি ভাবিয়া তাহার পিতা মাতা এই নামকরণ করিয়াছিলেন বলা মুশকিল, কেন কোনো অভিভাবক আদৌ চাহিবেন যে তাহার পুত্র বিষ পান করিবে, ইহা আমার পক্ষে যুক্তি দিয়া বোঝা সম্ভব নহে। তাহার ওপর আবার নাকি বালক সেই বিষ পান করিয়া জীবিত থাকিবে এবং জগৎকে উদ্ধার করিবে! পিতা মাতা-রা নাম রাখিবার সময় একটু ভাবিতে পারেন, যে ওনারা বালকটি চোখ মেলার পূর্বেই তাহার ওপর জগৎ সংসারের বোঝা চাপিয়ে দিতেছেন। তাই বিদেশী মতে টম , হ্যারি নাম গুলোই আমার বেশি প্রিয়। আমি হয়তো বিবাহ করিব না, হয়তো নিজের সন্তান এই বসুন্ধরার কোলে অনিবও না; তবু , যদি আদৌ পিতৃত্ব অনুভব করি, তবে নামকরণে কোনো আড়ম্বর রাখিব না। আবার ভুল দিকে পাঠককে লইয়া আসিয়াছি! বালকের গল্প নিয়ে পাঠক উৎসাহী, আমার জীবন কাহিনীতে নয়, তাও আবার যদি সেই কাহিনীতে কোনো দৃঢ়তা থাকিয়া থাকে। না, পাঠক পরম শ্রদ্ধেয়, তাঁহার রুচি বিচার করা মোটেও ভদ্রতা নহে।
নীলকণ্ঠ রিকশায় কাঁদিতে কাঁদিতে বাড়ি ফিরিতেছে। তাহার কান্না কিছুতেই থামিতেছে না। হাউ হাউ করিয়া কাঁদিতেছে। বাচ্চারা কাঁদে, অন্তত যখনকার ইতিহাস লিখিতেছি, তখন কাঁদিত। ইহার মধ্যে তাৎপর্য পূর্ণ কিছু হয়তো পাঠকের নিকট নাই । কিন্তু লেখক যদি জাতিস্মর হইয়া থাকেন, তবে তিনি তো বালকের ভিতরে চলা তোলপাড় দেখিতে পাইবেন। যদিও এই লেখক জাতিস্মর কিনা, বর্তমান জীবনে তাহার টের আমি পাইনাই। আঃ! আবার নিজেকে লইয়া পড়িলাম! নীলকণ্ঠের গল্পে ফিরিয়া যাই এখনই, না হইলে পাঠক আর সহ্য করিবেন না।
নীলকণ্ঠ কাঁদিতেছে, হাউ হাউ করিয়া কাঁদিতেছে। রিকশা ছুটিতেছে। এমন সময় পশ্চাতে এক সাইকেল আসিয়া উপস্থিত হইলো।
"একি নীলকণ্ঠ তুমি কাঁদিতেছো কেন? পরীক্ষা ভালো হয় নাই?"
বিস্ফোরিত লাল চক্ষু লইয়া টুকটুকে রাজপুত্র দেখিলো তাহার অঙ্কের মাস্টারমশাই তাহাকে প্রশ্ন করিতেছে!
এ কি অদ্ভুত ব্যাপার! অঙ্ক পরীক্ষা দিয়া সে ফিরিতেছে , আর তাহার বাড়ির অঙ্ক শিক্ষক ঠিক এই সময়ই তাহার রিকশার পশ্চাতে আবির্ভূত হইলেন কি করিয়া? নীলকণ্ঠ সহজেই বিস্মিত হইয়া পড়ে চিরকাল। কিন্তু এই মুহূর্তে তাহার দুঃখ তাহার বিস্ময়কে গ্রাস করিয়া লইলো, সহজেই।
সে আকুতির সহিত কহিলো, "আমি একটি অঙ্ক ভুল করিয়া ছাড়িয়া চলিয়া আসিয়াছি। কি মনে হইয়াছিল , ঐটা পড়ে করিব ভাবিয়া অন্য গুলি ঠিক করিয়াছি কিনা, তাহা ভালো করিয়া দেখিলাম। তাহার পর আর ওই অঙ্কটির কথা খেয়াল রহে নাই। " বলিয়া সে আবার হাউ হাউ শব্দে কাঁদিয়া উঠিল।
মাস্টার পড়িলেন বেপাকে। উনি বুঝিতে পারিলেন না কি বলে সান্তনা দিবেন। জিজ্ঞেস করিলেন, "বাকি গুলি সঠিক করিয়া আসিয়াছো তো?"
"হ্যা। কিন্তু যেটা ছাড়িয়া আসিয়াছি, ঐটিও আমি পারিতাম। পাঁচটি নম্বর চলিয়া গেল। " নীলকণ্ঠ আবার চক্ষু হইতে অশ্রুর ধারা নিক্ষেপ করিল।
মাস্টার বলিলেন, "ঠিক আছে, উহাতেই হইবে। তুমি জানো তুমি পারিতে। ইহাই তো যথেষ্ট। পরীক্ষা শেষ হইয়াছে , বাড়ি গিয়া খেলা করো। "
এই ঘটনার পর পৃথিবীতে অনেক কিছু ঘটিয়া গিয়াছে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আরও দুই বার বিবাহ করিয়াছেন, ভারত অলিম্পিক্সে গুলি ছোড়ায় সোনা পাইয়াছে , সুনামি আসিয়া বর্তমানকে প্রলয়ের আভাস দিয়া গিয়াছে, প্লুটো তাহার বাড়ি হইতে বিতাড়িত হইয়াছে, অনেক রমণীর হৃদয় ভাঙিয়াছে, অনেক রমণী হৃদয় ভাঙিয়াছেন, নারীবাদ, জাতীয়তাবাদ, মাওবাদ সব কিছুই মনুষ্যত্বকে বাদ দিয়া নিজেদের দামামা বাজাইয়াছে, হিংসা নিজের থাবা তোমার, আমার সকলের মনে আরও কঠিন ভাবে বসাইয়াছে। আর নীলকণ্ঠ?
সে বিষ পান করিয়া চলিয়াছে।
No comments:
Post a Comment