Monday, November 19, 2018

ধর্মাবতার

Teaser :

ঠান্ডায় যখন কলকাতা কুয়াশার কম্বল জড়িয়ে ঘুমোতে ব্যস্ত, যখন মধ্য রাতে মদ্যপ আর পুলিশ ছাড়া কোনো বাঙালী বাইরে বেরোনোর সাহস করতে চায় না, এমন সময় অখিলেশ একটি লম্বা সিগারেটে ছোট্ট টান দিয়ে মহানগরীর বুকে নির্বিকার চিত্তে হেঁটে চলেছে। অখিলেশের গায়ে একটি পাতলা টি-শার্ট এবং পায়ে একজোড়া পাজামা। তার ঠান্ডা অন্য বাঙালীর চেয়ে কম গায়ে লাগে। চিরকালই। অখিলেশ জানে তার কারণ। সে অনেক বিষয়েই বাঙালীদের থেকে ভিন্ন, পরিচ্ছন্ন। সে আদৌ বাঙালী নয়। পদবীতে চট্টোপাধ্যায় জুড়ে থাকলেও, অখিলেশ জানে নিজের আসল পরিচয়। তার নামেই কলকাতার বিখ্যাত রাস্তা, তার হাতেই এই কলকাতা গড়ে ওঠা!
কতক্ষন সে হেঁটেছে, কোনো খেয়াল নেই। এক এক করে কলকাতার মানচিত্রের এক একটি স্তম্ভ সে এই ভাবেই রোজ পেরোয়। জিপিও, ফোর্ট উইলিয়াম, টাউন হল...রাইটার্স বিল্ডিং। লাল দীঘি পেরোতে পেরোতে তার চোখের সামনে নিজের ইতিহাস ভেসে উঠলো। নাঃ! আর নয়, আবার নয়! মানুষ তার এক জন্মেই সে জন্মের পাপের শাস্তি কেন পায় না? কেন কিছু পাপ এতো গাঢ় হয়ে যায়, যা জন্ম-জন্মান্তরেও মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়? অখিলেশ সিগারেট শেষ করে বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করলো। কি আর হবে আজ থেকে ২০০ বছর আগের কথা মনে করে? কেউ তো তাকে বিশ্বাস করবে না! কেউ তার অনুতাপ বুঝবে না, অনুভব করা তো দূরের কথা। পতনের কলকাতার মানুষের সময় নেই এই মহানগরীর স্রষ্ঠার মনঃকষ্টের খোঁজ নেওয়ার। বাঙালী জাতির এই হওয়ার ছিল। অকৃতজ্ঞ জাত! হে ভগবান, এই শাস্তিই তোমার দিতে হলো ? বেড়াল, কুকুর, ছাগল কোনো কিছু হিসেবে আমায় ফেরত পাঠাতে! বাঙালী বানালে! লোকে হাসবে, কলকাতার বিধাতা ওয়ারেন হেস্টিংস বাঙালী হয়ে পুনর্জন্ম নিয়েছে! হয়তো দেখা যাবে ওই ছিঁচকে নন্দকুমার জ্যোতি বসু হয়ে জন্মেছিলো!
সব ইতিহাস যেন দাউ দাউ করে তার চোখের সামনে জ্বলতে শুরু করলো!

(Under construction)

No comments:

Post a Comment

বন্ধু

 ভোর-রাতে, নিঃশব্দে সময় এসেছিল পাশে  জীবনের কিছু ক্ষণ নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে । হাতে হাত, পুরোনো দুই বন্ধুর দেখা বহুদিন পর; হঠাৎ করেই খুঁজে...