Tuesday, July 26, 2016

Jilipi

আজকাল বই -এর ফাঁকে প্রাক্তন প্রেমিকা  বা ক্রাশ -এর দেওয়া চিঠি পাওয়া যায় না। জিমেইল নামক বস্তুটি স্মৃতির reservoir -এর কাজ করে। পুরোনো এক ক্রাশ-এর সাথে কথপোকথন পড়লাম কিছুক্ষন। ছোটবেলার নিজেকে একদমই বেমানান লাগে এসব ঘাটলে। জীবনে ভালো লেগেছে কত  নারীকে। এক সময় জেদ ছিল এক জনের সাথেই সমস্ত জীবন কাটাবো।True Love যাকে বলে আরকি। কিন্তু এক এক করে আমার মনে মহিলারা বাড়তে শুরু করলো। এখন বুঝি আমি মানুষটা  এরকমই। সরল , কাব্যিক , স্বপ্নালু। তবে আমায় মেয়েবাজ আখ্যাটা কেউ সহজে দিতে পারবে না। একাই থাকি , বিরক্ত হলেও desperate হয়ে কাউকে স্টক করিনা। যাই হোক , পুরোনো ক্রাশ-এ ফিরি।  দেখলাম এই মেয়েটি আমায় বলেছিলো যে ওর জীবনে ইনস্পিরেশন ভীষণ ভাবে মিস করছে। কি আজেবাজে reply দিয়েছিলাম তখন সেটা আর খেয়াল নেই। কিন্তু আজ ওর কথাটার মানে আমার কাছে অনেকটাই স্পষ্ট। কাল রাতেই এক বান্ধবীকে নিজেই এই কথা বলেছি যে আমার জীবনে কোনো ইনস্পিরেশন-ই বেশী দিন স্থায়ী হয় না। হয়তো relapse করে , কিন্তু সব কটার-ই একটা লোকাল মেয়াদ থাকে। চিরন্তন হয়ে ওঠা ইনস্পিরেশন বড়-ই  কম। মানুষের মন ভিন্ন জিনিস খোঁজে। কেউ তাই মনে করে জীবনে সাফল্য পাওয়াই সব , কেউ শান্তি চায়, কেউ আবার ভালোবাসা (অশান্তি মেশানো ) , কেউ excellence . বস্তুত: আমার কোনোটাই প্রয়োজন নেই। বয়সের সাথে স্বপ্নগুলো ক্রমশই ফিকে হয়ে যাচ্ছে।মাতব্বরের মত সবাই মনে করে যে তারা বোঝে জীবনের ঠিক পথ কোনটা। অন্যকে যা নিয়ে directly /indirectly criticize করে , নিজেদের মধ্যেও যে এক-ই চরিত্র বাসা বেঁধে আছে, তা জেনেও অস্বীকার করে। কিসের যে ভয় এতো মানুষের! মুখে সমাজসচেতন বুলি কিন্তু ভেতরে সব কিছু নিংড়ে কন্ট্রোল করার আদম্য ইচ্ছে। সব ইমোশন-এই যেন পেস্টিসাইড মিশে গেছে।
পুরোনো প্রেমিকা আর পুরোনো ক্রাশ-এর বোধয় একটাই তফাৎ।একজনকে ঠিক পুরোনো বলা যায়না। কখনোই। প্রেম উড়ে যায় যে সকল মানুষের , সমাজ তাদের গালাগালি দেয় বটে কিন্তু এই সমাজ-ই আবার সন্যাসীদের পূজো করে! তা করুক। পিছুটান না থাকা পূজ্য তো বটেই। আমার সেই ক্রাশ এও বলেছিলো, যে কিছু কিছু ভালোবাসা না পাওয়াই ভালো। তার মধ্যেই নাকি রোম্যান্স  থাকে। এসব ফালতু কথা। রোম্যান্স দু তরফা না হলে ঠিক জমে ক্ষীর হয় না। মাঝেই ছানা কেটে যায়। এবার কার ছানা ভালো লাগবে আর কার ক্ষীর , তা তো ব্যাক্তিগত স্বাদ নির্ভরশীল। কার দেহে কত sugar , সেই মাপ মত তার খাদ্য চার্ট হওয়া উচিৎ। কিন্তু প্রেম তো জিলিপি , প্যাঁচ আর রস দুটোই মানুষকে আকৃষ্ট করে। তখন আর ডায়েটিং কে করতে পারে! এই যে আমার বন্ধু সাহেব , নিত্যদিন নতুন প্রেমিকার ছোঁয়া পায় (তা মনেই হোক বা অন্য স্থানে ) তা দেখে আমার যে একেবারেই হিংসে হয়না তা বললে ডাহা মিথ্যা বলা হবে। কিন্তু এই হিংসে /দু:খ ক্ষণস্থায়ী। ঠান্ডা জিলিপির প্যাঁচ তো আর সুস্বাদু না! তাই আমি ব্রড স্কেলে মনে করি যে ভালোই আছি। আমি কারোরটা মারছি না, কেউ আমারটা মারছে না। নেগেটিভ-এর 'গুনে' আদতে পসিটিভ আউটকাম-ই হচ্ছে। এখানে বুঝিয়ে লেখা দরকার পসিটিভটা কি। এটা ভাবলে ভুল হবে যে প্রেম থেকে দূরে থেকে আমি শান্তি প্রত্যাশা করছি। বস্তুতঃ আমি শহীদ মিনারের মাথা থেকে আমাদের সকলের প্রিয় চৌরঙ্গী পথটা লক্ষ্য করতে পারছি। অনেক্ষন খেয়াল করলে তবেই একসিডেন্ট দেখা যায়! একবার হয়ে গেলে সবাই দেখতে পায়। কিন্তু কি করে হলো , তা জানতে গেলে মশাই সিঙ্গেল থাকা কম্পালসরি!
এই লেখার প্রথম ও দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফ ভিন্ন মুডের হওয়ায় দয়া করে কমপ্লেইন করবেন না। আপনি যদি আমায় চেনেন, তাহলে জানবেন আমি আপনার কমপ্লেইন করা গায়ে, থুড়ি লেখায় মাখাই না। আমায় এর জন্য আপনার "পাকা" মনে হতে পারে। কিন্তু কি জানেন তো, পাকামো আমায় মানায়। পোঁদপাকা তো আর নই। তাই মন দিয়ে জিলিপির স্বাদ উপভোগ করুন।

ইতি,
তাওয়ার নিচের আগুন। 

No comments:

Post a Comment

বন্ধু

 ভোর-রাতে, নিঃশব্দে সময় এসেছিল পাশে  জীবনের কিছু ক্ষণ নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে । হাতে হাত, পুরোনো দুই বন্ধুর দেখা বহুদিন পর; হঠাৎ করেই খুঁজে...