Saturday, August 28, 2021

মন্থন

যে হিসেব নতুন, অথচ নতুনত্ব কিছু নেই
সেই হিসেব করেছি রাত্রি জেগে, অকারণে।
না, সে কোনো প্রেমের হিসেব নয়; স্বল্পতার।
প্রমান করেছি, যা ছিল তার খুব একটা বদলায় না,
ধর্ম বদলায় না, বদলায় সময়ের পদচিহ্ন,
একই থেকে যায়, জীবিত, পার্থিব, আহত।
এক থাকে না শুধু শুরুর বর্ণনা, ঢুকে পড়ে কোলাহল
ঢুকে পড়ে অস্থিরতা, ঢুকে পড়ে বিশৃঙ্খলা।

খাতা বন্ধ করি আমি, কলম গোঁজা অন্তরে।
শুতে যাই স্বপ্ন দেখতে আবার, খুঁজতে নতুন অঙ্ক
নাম, খ্যাতি, পেটের জন্য নয়, অহমবোধে;
সমুদ্রমন্থনে দেবাসুর পায় ভবিষ্যৎ, ইতিহাস নীল কণ্ঠ।

Monday, August 23, 2021

কবিতারা

 মাঝরাতে কাক ডাকে না।

ডাকে ঝিঁঝিঁ; ডাকে নিশি।

কালপুরুষের নিচে, কংক্রিটের খাঁজে

চোখে চোখ রেখে ডাক আসে;

বুকে উঠে আসে হিমশীতল হাত,

ওষ্ঠ ভেজে ওষ্ঠের অবিচারে

উত্তপ্ত হয় ভূমি, দামামা বাজে অন্তরে,

পিছিয়ে যায় আদর্শ, পিছিয়ে আসি আমি।

রেডিও যায় থেমে, গল্প ডাস্টবিনে

কবিতারা তবু এখনও আয়না চেনে ।।

Friday, August 20, 2021

অপদার্থের পদার্থ - Equilibrium vs Non-equilibrium

বাড়তে বাড়তে বয়সটা এমন উঁচুতে পৌঁছে গেছে যে এখন পড়লে হাড়গুলো আর আস্ত থাকবে না। তখন সেই মাটিতে লুটানো দেহ থেকে মাংস খুবলে নেবে শৃগালের দল, বাতাসে মিশবে পচতে থাকা রক্তের গন্ধ, ক্ষীণ হয়ে আসবে সমাজের চেতনা; লুপ্ত হব আমি। 

আমি আর সমাজ; একজন system , অন্যজন environment . বিচিত্র এই জীবন! বিচিত্র এই চাঞ্চল্য! আমি পদার্থ বিদ্যার ছাত্র, তাই কিছু অপদার্থতার প্রমান ছেড়ে যাওয়া আমার কর্তব্য বলেই বোধ হয়। আমাদের উচ্চ-শিক্ষায় চাঞ্চল্যের এক ডাকসাঁইটে নাম আছে - Entropy . দার্শনিকদের অনেক ধারণার মধ্যে একটি ধারণা হল, এই মহাবিশ্বের চাঞ্চল্য/entropy  ক্রমেই বৃদ্ধিমান; এবং বিভজ্জিত দুই ভাগে - system-এর entropy এবং সমাজের। সমাজ থেকে যে চাঞ্চল্য system-এ ঢোকে, তাকে বলে entropy flow; এবং system -এর ভেতর তার জন্য নতুন করে যে চাঞ্চল্য তৈরী হয় (তথাপি সমাজে বিচ্যুত হয়), তার আনুষ্ঠানিক নাম - entropy production . যদি কোনো system equilibrium-এ থাকে, তাহলে অঙ্কের হিসেব বলে, তখন entropy production-এর মান শূন্য। কেন? System আসলে মায়াবী -তার অগুন্তি রূপ (configuration)- সারাক্ষণই যেমন আমরা এক রূপ থেকে অন্য রূপ নিয়ে নি - ঠিক তাই। Equilibrium-এ যেকোনো দুটি রূপের মধ্যে system সমান তালে রূপান্তর করতে পারে - সে তখন চাঞ্চল্যের শিখরে বসে থাকে - তাই নতুন চাঞ্চল্য তৈরী হওয়ার কোন সুযোগ তখন আর থাকে না। মনীষীরা প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শান্ত হওয়ার টোটকা দিয়ে চলেছেন - আজকের পদার্থ বিদ্যার ভাষায় ভেবে দেখলে এটুকু বুঝতে পারি যে আর কিছু নয়, non-equilibrium বুঝতেই মানুষের এতো প্রাচীন সাধনা। 

ভাবছেন ঠাট্টা করছি? কি নিয়ে লিখতে শুরু করে হঠাৎ জ্ঞান ফলাচ্ছি? উদেশ্য সত্যি বলতে, কাছাকাছিই -জ্ঞান ফলানো নয় - ছড়ানো। সহজ ভাষায় আমাদের মতো কিছু উদাসীন মানুষের সারাদিনের ভাবনা আপনাকে বোঝানো - আপনি, যিনি আমাদের ভাবনা নিয়ে ভাবেন না কিন্তু প্রশ্ন করেন - আমরা কি করি ? একটু ধৈর্য নিয়ে বসুন, আপনার জন্যই লিখছি। 

এই যে সমান তালে রূপান্তরের কথা একটু আগে বললাম, এরও কিন্তু এক গম্ভীর নাম আছে - principle of  detailed balance . Equilibrium সর্বদা detailed balance মেনে চলে। Non-equilibrium এসব নিয়ম-কানুনের ঊর্ধে। সাধারণ, চলতি নিয়মের মাপদণ্ডে তাকে বোঝা শক্ত, ওই যেমন কিছু মানুষকে আমরা বলে ফেলি - "তুই এমনটা করতে পারিস তা আমি ভাবতেও পারিনি" - অনেকটা ওরকম। 

একটা সময় ছিল যখন মানুষ non-equilibrium বুঝতো current দিয়ে - যদি কোন system-এর মধ্যে দিয়ে current-এর চলাচল হয় -তাহলে সেই system equilibrium-এ থাকতে পারে না। এটা যুক্তি-যুক্ত কথা; current আছে মানে ক্ষয় আছে - ক্ষয় বা লাভ থাকা মানেই equilibrium নেই। যদি কোন system-এর মধ্যে ক্ষয় এবং লাভ একে-অপরকে cancel out করে দেয়, তাহলে তার মধ্যে দিয়ে গড়ে কোন current বইতে পারে না। তাহলে আর কি, সহজ ভাষায় মানুষ বলতে শুরু করলো, যে equilibrium হলো system-এর এমন অবস্থা যখন তার মধ্যে দিয়ে কোন প্রকৃতির current চলাচল হয় না। আর সত্য হাসলো; বিজ্ঞান হাসলো - খেলতে নেমেছো যার মাঠে, তার খেলা যে অত সহজ নয়! এমন এমন system আবিষ্কার হতে থাকলো, যার মধ্যে দিয়ে গড় current শূন্য অথচ তারা equilibrium-এর বাঁধাধরার বাইরে! ভাবছেন, কি ভাবে বোঝা গেল যে এরম অদ্ভুতুড়ে system equilibrium-এর বাইরে? ওই যে ভদ্রলোক, যিনি পেয়েছেন একটাই Nobel Prize কিন্তু পেতে পারতেন অন্ততঃ পাঁচটা - Albert Einstein, উনি দেখিয়েছিলেন যে কোন system যদি equilibrium-এ থাকে, তাহলে সে অবশ্যই কিছু সূত্র মেনে চলবে - যার মধ্যে প্রধান একটি সূত্র হলো - fluctuation-dissipation theorem. Equilibrium-এ থাকা একটি system-এর যেকোনো নির্দেশিকার গড়ের ধারেকাছে ওঠা-নামা এবং সেই system-এর শক্তির ক্ষয় একে-ওপরের সাথে এই fluctuation-dissipation সূত্র দিয়ে বদ্ধ।যদি কোন system এই সূত্র মানতে নারাজ হয়, তাহলে তার মানে একটাই - সে equilibrium-এ হয় পৌঁছয়নি, বা পৌঁছতে পারেনি।আর এই ভাবেই একের পর এক system আবিষ্কার হতে থাকলো, যারা গড়ে current-মুক্ত অথচ fluctuation-dissipation সূত্রও মেনে চলে না। যথারীতি non-equilibrium-ও দু'ভাগে ভাগ হলো -যে সব system-এ current আছে তাদের নাম দেওয়া হলো 'driven' (বাইরের কোন বল (force) দ্বারা  চালিত); এবং যাদের মধ্যে current নেই অথচ Einstein-এর সূত্র মানে না, তাদের বলা হলো, 'active' (নিজেই নিজেকে যে চালাতে পারে, বাইরের বলের যার প্রয়োজন নেই)।

এবার প্রশ্ন হলো, এই ধরণের system equilibrium থেকে কতটা দূরে থাকে? এই রঙীন hyperlink-এ click করলে তার ভালো একটি উত্তর পেতে পারেন। Equilibrium থেকে দূরত্ব - তার মানে কি? বরং সঠিক প্রশ্নটা করা যাক - তার মান কি? যাকে বলে, Quantification. আধুনিক research এই মান নির্ধারণেই রত; এবং এই মান লুকিয়ে আছে প্রধানত একটি নির্দেশিকায়, যার কথা আমরা শুরুতে আলোচনা করেছি - entropy production. এই entropy production-এর সঠিক সংজ্ঞা কি? তার সাথে detailed balance-এর গহীন সম্পর্ক কোথায়, এবং তা আদৌ কতটা ঠিক - তাই নিয়ে বিজ্ঞান মহলে তর্ক-বিতর্কের পালা চলছে বর্তমানে। এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের ওষুধ, প্রযুক্তি, ইত্যাদির চাবিকাঠি; লুকিয়ে আছে মহাবিশ্বের গভীরতম ইতিহাসের লেখন। তবে আজই আমরা সে পথে হাঁটবো না; একটু জিরিয়ে নেওয়া যাক। 

ওই যে শুরুতে বললাম, বয়স বেড়েছে - আমার এবং আমার লেখার। জিরিয়ে না নিলে গন্তব্যে পৌঁছনো কঠিন হয়ে যায়।

Saturday, August 14, 2021

Introduction ও Conclusion

"আর খেতে পারবো না; অনেক দেরি হয়ে গেছে!", বলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উঠে পড়লো অঙ্কুর। 

"রোজ রোজ ভাত নষ্ট করছিস বাবু! রাতে শুবি দেরি করে, আর আমার ওপর চোটপাট যত," ছেলের প্রতি অভিমান জানিয়ে দিলেন মা; কিন্তু অঙ্কুরের সেই দিকে খরচ করার মতো সময় নেই তখন। মায়ের আঁচলে মুখটা মুছে, একবার জড়িয়ে ধরে দ্রুত ব্যাগটা তুলে নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেল বাড়ি থেকে। 

৮:৪৩। উফ্ ... আজ বোধয় মিস-ই হয়ে গেল... সকাল ৯টায় ক্লাস; এখন সবে এন্টালি। মল্লিক বাজারে নেমে কলেজ অবধি ঢুকতেই তো আরও দশ মিনিট লাগবে। এর মধ্যে যদি বাস-টা মিস হয়ে গিয়েই থাকে, তাহলে আর ক্লাস করাও যা, না করাও তা। একবার বাস-স্টপ থেকে ডান দিকে তাকাতেই দেখা গেল ২২৩ আসছে। বুকের ভেতরটা কেমন যেন দুরু দুরু করে উঠলো অঙ্কুরের। 

ভিড় বাস। কিন্তু চোখ যদি ভিড় না খোঁজে, তাহলে আর ভিড় কই! স্যাঁট করে বাসে উঠে পড়লো অঙ্কুর সামনের দরজা দিয়ে। উঠেই দেখলো ডান দিকে। নেই...নেই...নেই...ওই তো ! বাসের সামনের দিকে মুখ করা প্রথম সিটেই বসে আছে জয়ীতা; আর আজও ঘুমাচ্ছে! সুদীর্ঘ নিঃস্বাস স্থান পেলো অসংখ্য প্রস্বাসের মাঝে। 

মল্লিক বাজার আসার ঠিক আগেই অঙ্কুর বাসের ভেতরের দিকে ঢুকে জয়ীতার দিকে হাত বাড়িয়ে ওর ব্যাগ ধরে দুবার জোরে টানতেই জয়ীতা হকচকিয়ে উঠে পড়লো; আর কিছু বোঝার আগেই চোখ পড়লো এক গাল হাসিতে ভরা অঙ্কুরের মুখে।

"নামতে হবে রে, চল!"

একটা ছোট্ট হাসিতে চুড়ান্ত লজ্জা লুকোনোর বৃথা চেষ্টা করতে করতেই জয়ীতা উঠে পড়লো; দুজন নামলো বাস থেকে। 

"এবার বড্ডো embarrassing হয়ে যাচ্ছে। রোজ রোজ অমানুষের মতো ঘুমোচ্ছি বাসে আর তুই দেখছিস!"

৮:৫৮। দুজন ছুটছে কলেজের দিকে এখন। 

"তোর পাশের মহিলার reaction-টা তো দেখলি না! এতটাই shocked হয়েছিলেন আমার কান্ড দেখে, বুঝেই পাচ্ছিলেন না চেঁচাবেন না হা করে দেখবেন কি করছে ঠিক ছেলে টা।" ছুটতে ছুটতেই হো হো করে হাসছিলো অঙ্কুর। 

জয়ীতা কোন উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি সেদিন, শুধু ঠোঁটে আগের ঘুমন্ত দিনের মতোই আলগা হাসি লেগেছিলো। 

****************************************************

"এই অঙ্কুরদা, আমি manuscript-টা পাঠিয়ে দিয়েছি কিন্তু email-এ; তুমি please lunch-এর আগে দেখে আমায় comments পাঠিয়ে দিও।"

সৌরভের ডাকে ঘোর কেটে গেল অঙ্কুরের। "Thanks রে, পাঠাচ্ছি; এমনিও তেমন কিছু correction-তো ছিল না। "

"না না, ওই just নতুন plot-টা ঢুকিয়ে দিয়েছি, আর Introduction আর Conclusion গুলো mildly বদলেছি। "

অঙ্কুর মাথা নাড়লো; Introduction আর Conclusion! সেই; আজ জয়ীতার বিয়ে, নেমন্ত্রন আছে। কলেজের  তিন বছর বাদে আর কথা হয়নি জয়ীতার সাথে; মাস ছয় আগে একটা বড় email করে জয়ীতা বিয়ের নেমন্ত্রন জানালো অঙ্কুরকে।  সেখানে লেখা ছিল, "বিয়েটা করেই নিচ্ছি।" তারপর একবার ফোনে আমন্ত্রণ। অঙ্কুরের না যাওয়ার তো কোন কারণ ছিল না জয়ীতার বিয়েতে। কেনই বা থাকবে? অঙ্কুরতো কোনোদিন জানায়নি ওর ভালোবাসার কথা। তাই গিয়ে উপহার দিয়ে পুরোনো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে খেয়ে চলে এলেই হলো! এখন সে কলকাতার এক নাম-জাদা পদার্থ বিদ্যার ইনস্টিটিউটের faculty member ; রেলা নিয়ে যাবে, খাবে, বেরোবে, আর অন্ধকার রাস্তায় আর বাড়ির ব্যালকনিতে চোখের জল ফেলবে; ব্যাস, আবার কি? থাক, সৌরভের manuscript-টা দেখে ফেলা যাক, ব্রাইট ছাত্র - অনেকটা নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায় ওর মধ্যে অঙ্কুর। 

********************************************************************

"কি রে, যাবি না বিয়েতে?" বাবা জিজ্ঞেস করলেন অঙ্কুরকে। 

"হ্যাঁ, এই তো ready হচ্ছি। "

"সাতটা বাজে, এখন ready হবি আর পৌঁছাবি কি রাত ১০টায়?"

"আরে না না, তাহলে আর খাবার থাকবে না। "

"হ্যাঁ, সেটা তো আমি জানি। ব্যাপারটা কি? কান্না পাচ্ছে?"

"উফ্ বাবা, এখন না! তোমার সব সময় এই attitude আমার ভালো লাগে না। দেখি, ready হতে দাও। "

"চল আমিও যাই তোর সাথে; আর তোর মাকেও বলি ready হতে, এমনিও তোর থেকে কম সময় নেয় তোর মা। "

"মানে! মানে টা কি? ইয়ার্কি মেরো না তো, দেরি হয়ে যাচ্ছে!"

"ইয়ার্কি কেন মারবো? দেখতে চাই বাপের ব্যাটা কতটা বাপের মতো হয়েছে। না দেখলে তো বুঝবো না তোর বউ-এর কতটা দরকার তোর মায়ের মতো হওয়ার। "

"এই যাও তো এখান থেকে। "

"আরে নে নে , পাঞ্জাবিটা পড়ে নে। এই শুনছো, তোমার ছেলে একদমই তোমার আর আমার দোষগুলোই পেয়েছে। আমিই এতদিন ভাবতাম উল্টোটা। "

অঙ্কুর বাবাকে ignore করে পাঞ্জাবি পড়তে থাকলো। এই সময় মা ঘরে ঢুকে এলেন। 

"কেন বিরক্ত করছো ওকে এখন? এমনিই দেরি করেছে এতো। "

বাবা মাকে বললেন, "আরে এসো এসো, তোমার খোকা যাচ্ছে দেবদাস হতে - দেখবে না ?"

অঙ্কুর এবার হেসে ফেললো, "তোমার হয়েছে জ্ঞান দেওয়া?"

বাবা বললেন, "শোন ব্যাটা, তোর মা-কে চেনার আগে আমি বেশ কিছুবার হাবু-ডুবু খেয়েছি। এই তোর-ই মতন আমি  নিজেকে দেবদাস বানিয়েছিলাম একবার। সে কি আনন্দ কি বলি, মানে তুই আরেকটু হলেই সেটা বুঝতে পারতি; কিন্তু বাবা হয়ে তো আর ছেলেকে নেশাগ্রস্থ হতে দিচ্ছি না। যাই হোক; আমি একজনকে কলেজে কিছুই বলে উঠিনি; তারপর farewell-এর  দিন ধপ করে প্রেমে পরে গেছি। আসলে পড়তাম না। সব program শেষ হওয়ার পর বেরোনোর সময় সেই দিদিমনি আমার পাশে হাঁটতে হাঁটতে নিছক balance হারিয়ে পড়ে যাচ্ছিলো আর আমি তাকে সেই পড়ে যাওয়া থেকে আটকেছিলাম। সে নিজেকে সামলাতে আমার হাত-টা ধরেছিলো - আর আমিই পুরো বেসামাল হয়ে গেলাম! কেউ মাতাল হতে চাইলে কি আর মদের প্রয়োজন হয়? নিজেই প্যামফ্লেট ওড়ালাম নিজের উপন্যাসের। মানুষ লুফে নিলো! আমায়  পায় কে তখন! প্রেমের থেকে অনেক বড় নেশা হলো নিজেকে প্রেমিক ভাবা।
এরপর তোর মা এলো জীবনে। সেই প্রেম কাহিনী শুনেই তো ছোটবেলায় ঘুমাতি যেতি। নতুন করে কি আবার শুনবি? চোখ খুলে ঘুমাতে চাইলে আমি শুনিয়ে দিচ্ছি আবার। "

মা বললেন, "সাড়ে ৭টা বেজে গেল। তোর বাবার কথা শুনবি না বিয়ে বাড়ি যাবি ?"

"দুটোই করবে। আমাদের ছেলে; কি রে?", বাবা চোখ তুলে তাকালেন অঙ্কুরের দিকে। 

অঙ্কুর মা,বাবাকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর মা অঙ্কুরের চোখের জল আলতো করে মুছে দিতে দিতে বললেন, "তোর বাবা কিন্তু আমায় ছাড়া অন্য কাউকে এতো ভালোবাসতে পারতো না। "

বাবা বললেন, "এই নে,  তোর Uber is arriving in 4 minutes . চল বেরো।"

***************************************************************

"বাবু ঠিক থাকবে তো, বলো ?"

"না। ঠিকের থেকে অনেক বেশি ভালো থাকবে। ঠিক থাকা বা না থাকা একটা choice . He's a smart boy "

******************************************************************

"তুই এতক্ষনে এলি? Last batch বসতে চলেছে; আমি ভাবলাম আসবি না।" জয়ীতা অভিযোগের সুরে বললো। "যাক ভালোই হলো, আমাদের সাথেই খেতে বসবি।" 

"তুই বিয়ের মাঝে আমায় নিয়ে ভাবছিলি?"

কথাটা শুনে একটু থতমত হয়ে গেল জয়ীতা। তারপরই সেই বাসের ঘুম ভাঙা হাসিটা ঠোঁটে ফেরত এলো। 

হাসলো অঙ্কুরও। বিয়ের present-টা জয়ীতার হাতে তুলে দিয়ে বললো, "ভালো থাকিস।"

Sunday, August 8, 2021

Blessing

Everywhere I go, everywhere I see

I meet people who I don't want to be

I don't want to paint my name

In glorious letters of untamed fame.

I wish I receive the blessing I seek

A little humble, a better human being.

Sunday, August 1, 2021

রাতের শহর

রাতের শহরে কি না দেখা যায়!

মেঘে ঢাকা আকাশের আলো,
খসে পড়া কিছু তারকা এলোমেলো
প্রাচীনের কোলাহল, আধুনিক ঘোলা জল
কোথাও শুরু, কোথাও শেষ, কোথাও চঞ্চল -
হেঁটে চলে দুটি প্রাণ, এক ফালি অভিমান
আঁকাবাঁকা পথে মুক্তমনা মৃদু হৃদয়ের গান।

তুমি আর আমি শেষে, চর্চা করি দেশের
জীর্ণ গ্রন্থাগারের চিঠি মানুষের উদ্দেশে
যা লেখা হয়েছিল তবু পড়া হয়নি আজও -
নতুন পদক্ষেপে তাই বাধ সাজে আন্দাজও।

থাক তবে আজ লেখা, থাক যত ভালোবাসা
প্রিয় শহর, তোমার তুলি এক ক্যানভাস কুয়াশা ।।



বন্ধু

 ভোর-রাতে, নিঃশব্দে সময় এসেছিল পাশে  জীবনের কিছু ক্ষণ নিয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে । হাতে হাত, পুরোনো দুই বন্ধুর দেখা বহুদিন পর; হঠাৎ করেই খুঁজে...