ভুটানে আমি তাকে আনন্দে খিলখিলিয়ে হাসতে দেখেছি। আবার শহরের কোনায় গুমরে, অবহেলায় বইতেও দেখেছি। আহ্লাদ - অবহেলার মিশ্রণে আমি তার নিশ্চুপ প্রবাহও অনুভব করেছি।
আমি নদীকে প্রশ্ন করেছি, সে কেন সমুদ্রের পথে নিজেকে আটকিয়ে নেয় না। কেন মিষ্টত্ব বলিদান দিয়ে নোনা আবহাওয়ায় নিজেকে খুইয়ে ফেলে? নদী উত্তর দেয়নি। সে বয়ে গেছে। আমি সমুদ্রকে প্রশ্ন করেছি, কেন সে নদীকে এত টেনেও মিষ্টি থাকতে পারলো না, কেন নদীর অস্তিত্ব সে অবশিষ্ট রাখলো না? সমুদ্র কিন্তু উত্তর দিয়েছে।
আমি অস্তিত্ব রাখিনি? কার? আমি কি নিজেই তার অস্তিত্ব নই? আর আমার নোনাভাব? নদীই তো বয়ে নিয়ে এসেছে আমার মধ্যে, পৃথিবীর যত স্বাদ। আমি গ্রহণ করেছি। আমার কন্ঠ নীল। আমিই কালের নিয়মে মন্থিত হই, তোমার অমৃত মেঘ হয়ে আকাশে যায় ঈশ্বরের ঘরে; আর যাকে বিষ বলো, সেই নুন থেকে যায় আমার বুকের গভীরে। বিষ? আমার বুকেই প্রাণের সৃষ্টি, আর তোমরা বলো বিষ! যে নদীর মিষ্টত্ব রক্ষা করতে তোমার এত ভাবনা, সে মায়াবিনী। অস্থির, প্রবাহমান জীবন। সে আমার কাছে আসে স্থিরতার আশায়।
অথচ, অস্থির আমিও। অস্থির সবাই। এই মহাবিশ্ব জীবিত। আমরা পাত্রমাত্র তার লীলা খেলায়।